World suicide prevention day-“Creating Hope Through Action”

suicide prevention

World suicide prevention day-“Creating Hope Through Action”

Dr. Shaafi Raaisul Mahmood

Writer:
Dr. Shaafi Raaisul Mahmood
MBBS, MD (Psychiatry)
Attending Consultant
Psychiatry & Mental Health At Evercare Hospital Chattogram

World suicide prevention day is established by International Association of Suicide Prevention in conjunction with World Health organization (WHO).

This day is celebrated every year on September 10th.

The goals of this celebration are-

  • To draw attention to this issue.
  • To implement actions to prevent suicide.
  • To increase the awareness among communities, governments and organizations.
  • To reduce stigma.
  • To provide a singular message that suicide is preventable.

According to the report of World Health organization (WHO), there are currently more than 700000 suicides per year worldwide and each suicide profoundly effects many more people .

So  suicide prevention is a public health priority, and to reduce the suicide mortality rate urgent action is required.

There are many causes of suicide and among them depression is the prominent one.

“Creating Hope Through Action” is the triennial theme for the World Suicide Prevention Day from 2021-2023. This theme reflects that through actions we can prevent suicide, encourage hope and to understand that suicide is not a solution, there is an alternative to suicide.

By creating hope through action, we can signal to people experiencing suicidal thoughts that there is hope and that we care and want to support them. It also suggests that our actions, no matter how big or small, may provide hope to those who are struggling. (Source- WHO)

WHO is continuing work with its partners to support countries to take concrete measures in this direction.

 

 

 

 

বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস- “কর্মের মাধ্যমে আশা তৈরি করা”

ডাঃ শাফী রাইসুল মাহমুদ
এমবিবিএস, এমডি (সাইকিয়াট্রি)
এ্যাটেন্ডিং কনসালটেন্ট – সাইকিয়াট্রি

 

বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সাথে যৌথভাবে আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা প্রতিরোধ সংস্থা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়। এই দিনটি প্রতি বছর ১০ই সেপ্টেম্বর পালিত হয়। এই উদযাপনের লক্ষ্য হল-

• এই সমস্যার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা।
• আত্মহত্যা প্রতিরোধে পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা।
• সম্প্রদায়, সরকার এবং সংস্থাগুলির মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
• মানসিক সমস্যা ও আত্মহত্যার কারণগুলোর প্রতি বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি কমিয়ে আনা।
• আত্মহত্যা যে প্রতিরোধযোগ্য তার একটি একক বার্তা প্রদান করা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) রিপোর্ট অনুসারে, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ৭ লাখ এরও বেশি আত্মহত্যা হয় এবং প্রতিটি আত্মহত্যা আরও অনেক মানুষকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। তাই আত্মহত্যা প্রতিরোধ একটি জনস্বাস্থ্য অগ্রাধিকার, এবং আত্মহত্যার কারণে মৃত্যুর হার কমাতে জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন। আত্মহত্যার অনেক কারণ রয়েছে এবং তার মধ্যে বিষণ্নতা একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।

২০২১-২০২৩ সাল পর্যন্ত বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসের ত্রিবার্ষিক থিম হল “কর্মের মাধ্যমে আশা তৈরি করা”। এই থিমটি প্রতিফলিত করে যে কর্মের মাধ্যমে আমরা আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে পারি, আশাকে উত্সাহিত করতে পারি এবং বুঝতে পারি যে আত্মহত্যা কোনও সমাধান নয়, আত্মহত্যার বিকল্প রয়েছে। কর্মের মাধ্যমে আশা তৈরি করার মাধ্যমে, আমরা আত্মঘাতীমূলক চিন্তার সম্মুখীন হওয়া লোকেদের কাছে ইঙ্গিত দিতে পারি যে অবশ্যই  আশা আছে এবং আমরা এই আশাকে গুরুত্ব দেই ও যত্ন করি এবং তাদের সমর্থন করতে চাই।

তাছাড়া আমাদের উদ্যোগ ও কর্ম গুলি যত বড় বা ছোট হোক না কেন, যারা সংগ্রাম করছে তা তাদের আশার আলো হতে পারে। (সূত্র- WHO) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার অংশীদারদের সাথে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে যা দেশগুলিকে এইসব ক্ষেত্রে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করে।

 

লিভার সুস্থ রাখতে যা করবেন

লিভার সুস্থ রাখতে যা করবেন

লিভার সুস্থ রাখতে যা করবেন

লিভার বা যকৃত মানবদেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ, যার প্রধান কাজ হলো রক্ত পরিশোধন ও ক্ষতিকর টক্সিন বের করে শরীরকে সুস্থ রাখা। লিভারের কার্যকারিতা হ্রাস পেলে ক্ষতিকর টক্সিন শরীরে জমে যায়। এতে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবনযাত্রায় অস্বাভাবিকতা ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে লিভারে নানা রোগ দেখা দেয়।

অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবেটিস, রক্তে অতিরিক্ত মাত্রায় ট্রাইগ্লিসারাইড, এইচডিএল-এর মাত্রা হ্রাস বা বৃদ্ধি, কার্বোহাইড্রেট ও চর্বিজনিত সমস্যার কারণে লিভার ক্ষতিগ্রস্থ হয়। লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হলে কিছু উপসর্গ লক্ষ্য করা যায়, যেমন; চোখ হলুদ বর্ণের হয়ে যাওয়া, পেটে তরল জমে ফুলে যাওয়া, অতিরিক্ত ক্লান্তি-অবসাদ অনুভব করা, শরীরে ভিন্ন ভিন্ন স্থান চুলকানো, হঠাৎ হঠাৎ কথা ভুলে যাওয়া ইত্যাদি।

উল্লেখ্য, ভাইরাস বা জীবাণু আক্রমণে লিভার সংক্রমিত হলে লিভারে প্রদাহ হয়, যা লিভারের কার্যক্ষমতা হ্রাসে ভূমিকা রাখে। লিভার ইনফেকশন বা যকৃত সংক্রমণের সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ধরন হলো, হেপাটাইটিস ভাইরাস। আক্রান্ত ব্যক্তির মলের সংস্পর্শে আসলে বা দূষিত খাবার-পানি শরীরে গেলে ‘হেপাটাইটিস এ’ ছড়ায়। অন্যদিকে, হেপাটাইটিস বি এবং সি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রক্ত, বীর্যসহ অন্যান্য শারীরিক তরলের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করতে পারে। তাই লিভার ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কোন উপসর্গ দেখা দিলে হেপাটাইটিস নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

বিশেষজ্ঞ পরামর্শ

বিশেষজ্ঞরা লিভার সুস্থ রাখার জন্য মূলত পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। লিভারকে সুস্থ রাখতে রসুন ভীষণ উপকারী। রসুনে অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল জাতীয় উপাদান রয়েছে। নিয়মিত রসুন খেলে লিভার থেকে এক ধরনের বিশেষ এনজাইম তৈরি হয়, যা শরীর থেকে টক্সিন নিষ্কাশনে সাহায্য করে।

এছাড়া কাঁচা হলুদ, বিভিন্ন ফলমূল (বিশেষ করে আপেল, পেঁপে, আঙ্গুর), সবুজ শাকসবজি, সয়াবিন, ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য, আমলার রস, গ্রিন-টি, কফি ইত্যাদি খেলে বা পান করলে লিভার সুস্থ থাকে। তবে কিছু খাবার বর্জন করাও প্রয়োজন। যেমন; শর্করা জাতীয় খাবার কম খেতে হবে। যাদের মদ্যপানের অভ্যাস রয়েছে তাদের লিভার বিশেষ ক্ষতির ঝুঁকিতে রয়েছে।

এছাড়া সফট ড্রিংকস, চকোলেট, আইসক্রিম, ভাঁজাপোড়া খাবার, কাঁচা লবণ, বাটার-ঘি, অতিরিক্ত চিনি, রেডমিট ইত্যাদি খাবার যতটা সম্ভব বর্জন করা উচিৎ। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ মতে খাদ্যতালিকা নির্ধারণ করা যেতে পারে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখলে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সামগ্রিক ওজনের ১০% কমানো গেলে ফ্যাটি লিভারের পরিমাণ ৩-৫% কমানো সম্ভব।

 

ডাঃ মুশফিকুল আবরার
সহযোগী কনসালটেন্ট
হেপাটোলজি, এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম

 

ব্যথাহীন প্রসব: কি, কেন, কীভাবে?

ব্যথাহীন প্রসব কি কেন গুরুত্বপূর্ণ | এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রাম

ব্যথাহীন প্রসব: কি, কেন, কীভাবে?

বলা হয়, একজন নারীর প্রসবকালীন ব্যথা নাকি শরীরের ৫৬টি হাড় একসাথে ভাঙার সমপরিমাণ হয়ে থাকে। প্রসবকালীন ব্যথার সঙ্গে অন্যকোন ব্যথার তুলনা করা যায় না। বর্তমান যুগে অধিকাংশ নারী এই ব্যথা নিয়ে আতঙ্কে থাকেন, ফলে বাড়তি স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও অনেকেই স্বাভাবিক প্রসব (নরমাল ডেলিভারি) এড়িয়ে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করাতে চান।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য বলছে, ১৯৯৫-৯৬ সালে আমেরিকায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানের হার ছিল ২০.৭ শতাংশ, যা ২০১৪-১৫ সাল নাগাদ ৩২.২ শতাংশে এসে পৌঁছায়। বাংলাদেশে বর্তমান অস্ত্রোপচার জনিত প্রসব বা সিজারিয়ান অপারেশনের হার প্রায় ৪৫ শতাংশ, যার মূল কারণ নারীদের প্রসবকালীন ব্যথাভীতি।

তবে নারীদের জন্য স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে বিশ্বের চিকিৎসক-বিজ্ঞানীরা। চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রযুক্তির সঠিক বাস্তবায়নের ফলে ব্যথামুক্ত প্রসবও এখন সম্ভব। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ইতোমধ্যেই অস্ত্রোপচার ছাড়া সন্তান প্রসব হচ্ছে, যা নিরাপদ ও ব্যথামুক্ত। যুগান্তকারী এই পদ্ধতিগুলোর মধ্যে এপিডিউরাল পদ্ধতি অন্যতম। এটি মূলত নরমাল ডেলিভারির মতোই একটি প্রক্রিয়া তবে ব্যথামুক্ত।

এ পদ্ধতিতে সাধারণত মেরুদণ্ডে কিছু ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে (সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মতো) প্রসব চলাকালীন মায়েদের ব্যথামুক্ত রাখা হয়। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি স্বয়ংক্রিয় কম্পিউটারের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়। এই সময়ে মা হাঁটাচলা করতে, কথাবার্তা বলতে, এমনকি হালকা খাবারও খেতে পারেন। আবার সন্তানের নড়াচড়াও মা বুঝতে পারেন।

এই সময়ে ব্যথা কমানোর জন্য ওষুধ খেলে তা মা থেকে শিশুর রক্তে প্রবাহিত হওয়ার কোন ঝুঁকি নেই, নেই পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াও। এই পদ্ধতি ব্যবহারে দ্রুত ও দীর্ঘসময়ের জন্য ব্যথা কমানো যায়। এমনকি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনে হলেও দ্রুত অবশ করা যায়। আবার স্বাভাবিক প্রসবের পর মা তাৎক্ষণিকভাবে নবজাতককে বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন।

ব্যথামুক্ত স্বাভাবিক প্রসবের জন্য অত্যাধুনিক প্রি-ডেলিভারি, ডেলিভারি ও পোস্ট-ডেলিভারি ব্যবস্থা, সিনক্রোনাইজড অভিজ্ঞ লেবার ও অ্যানেসথেসিয়া টিম, ক্লোজ মনিটরিং, জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থা ইত্যাদি সুবিধা থাকা আবশ্যক। তবেই সুস্থ ও নিরাপদ প্রসবের নিশ্চয়তা দেওয়া যায়। এই পদ্ধতিতে যেই ওষুধ ব্যবহৃত হয়, সেটি এপিডিউরাল অ্যানেসথেসিয়া নামে পরিচিত। মেরুদণ্ডের ভেতরে ছোট একটি ক্যাথেটার ঢুকিয়ে এই ওষুধ দেওয়া হয়।

এটি অনেকটা সাধারণত সিজারিয়ান অপারেশনের সময় ব্যবহৃত স্পাইনাল অ্যানেসথেসিয়া মতো, তবে এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটির জন্য চাই বিশেষ প্রশিক্ষণ। এছাড়াও, নবজাতকের নিবিড় পরিচর্যার জন্য বিশ্বমানের এনআইসিইউ ও ইনফেকশন কন্ট্রোল প্রোটোকল ঝুঁকিমুক্ত প্রসব নিশ্চিত করে।

বিগত বছরেগুলোর তুলনায় বর্তমানে প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে বেশ উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। পিছিয়ে নেই স্বাস্থ্য বা চিকিৎসা খাতেও। উন্নত প্রযুক্তি, অভিজ্ঞ চিকিৎসক, আধুনিক চিকিৎসা-সরঞ্জামের মাধ্যমে দেশেই এখন বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যাচ্ছে। এদের মধ্যে বন্দরনগরীর সর্ববৃহৎ হাসপাতাল এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম অন্যতম। বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সকল ব্যবস্থাই রয়েছে এই হাসপাতালে। তাই প্রসব ব্যথা নিয়ে আতঙ্কিত নয়, বরং মাতৃত্বের আশীর্বাদে হোন উচ্ছ্বসিত।

ডাঃ সানজিদা কবির
কনসালটেন্ট- অবস্ এন্ড গাইনী
এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম।

যেমন হতে পারে স্ট্রোকের চিকিৎসা

স্ট্রোকের চিকিৎসা Stroke Treatment

যেমন হতে পারে স্ট্রোকের চিকিৎসা

বিশ্বব্যাপি স্ট্রোকে আক্রান্তের হার দিন দিন বেড়েই চলেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সচেতনতার অভাবেই স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ১৫ থেকে ২০ লক্ষ রোগী স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছে বা ঝুঁকিতে রয়েছে এবং প্রতি হাজারে গড়ে ৩ থেকে ৫ জন রোগী স্ট্রোকের শিকার হচ্ছে।

এছাড়া, নন কমিউনিকেবল ডিজিজ হিসেবে স্ট্রোক এখন দ্বিতীয় মৃত্যুর কারণ হিসেবে গণ্য হয় এবং যারা জীবিত থাকেন তারাও নানান শারীরিক প্রতিবন্ধিতায় ভুগেন বা ঝুঁকিতে থাকেন।

মস্তিষ্কের অভ্যন্তরীণ রক্তনালীগুলোর মধ্যে রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে বা রক্তনালীতে চর্বি জমা হলে (মূলত থ্রম্বো এম্বোলিজমের কারণে হয়ে থাকে) তা ইস্কেমিক স্ট্রোক হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে, মস্তিষ্কের অভ্যন্তরীণ রক্তনালী ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হলে ও আক্রান্ত স্থানের টিস্যুগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করলে তাকে হেমোরেজিক স্ট্রোক বলা হয়। এটি রোগীর বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

স্ট্রোকের উপসর্গ

ইস্কেমিক ও হেমোরেজিক উভয়েরই স্ট্রোকের উপসর্গই এক, যা প্রাথমিকভাবে পার্থক্য করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। শরীরের এক পাশে ঝিম ঝিম করা বা অবশ মনে হওয়া, দুর্বল অনুভব করা, হঠাৎ করে জ্ঞান হারিয়ে ফেলা, মুখ বেঁকে যাওয়া বা আক্রান্ত পাশের হাত-পা নাড়াতে সমস্যা হওয়া ইত্যাদি উভয় স্ট্রোকেরই প্রাথমিক কিছু উপসর্গ। এমতাবস্থায় তাই রোগ নির্ণয়ের জন্য সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করা অতিব জরুরি। কারণ উপসর্গ এক হলেও দুই রোগের চিকিৎসা সম্পূর্ণ ভিন্ন।

ইস্কেমিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে মেডিসিন বা সার্জারির মাধ্যমে রোগীর মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক বা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। তবে হোমোরেজিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে রক্ত জমাট ভাঙার জন্য অপারেশনের প্রয়োজন পড়তে পারে। রিহ্যাবিলিটেশন চিকিৎসার ক্ষেত্রে যেমন রোগীর ফিজিক্যাল বিহ্যাবিলিটেশন প্রয়োজন, তেমনই প্রয়োজন অকুপেশনাল রিহ্যাবিলিটেশন।

আবার অনেক সময় দেখা যায় রোগীর কথা বলতে অসুবিধা দেখা দেয়, যা মেডিকেল পরিভাষার এফাশিয়া হিসেবে পরিচিত। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ রিহ্যাবিলিটেশন। রিহ্যাবিলিটেশন চিকিৎসা মাল্টিডিসিপ্লিনারি টিমের তত্ত্বাবধায়নে হওয়া উচিৎ, যা রোগীর সার্বিক অবস্থা ও অসুবিধা অনুযায়ী উপকারী এবং এর মাধ্যমে রোগীর দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

স্ট্রোকের কারণে রোগী অজ্ঞান হয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে রোগীর শ্বাসনালি, শ্বাস-প্রশ্বাস ও রক্ত সঞ্চালন সচল রাখার (সিপিআর থেরাপি এক্ষেত্রে বিশেষ কার্যকরী) চেষ্টা করতে হবে। রোগীকে একদিকে কাত করেবালিশ ছাড়া মাথা নিচু করে শোয়াতে হবে। চোখ ও চোখের প্রতিক্রিয়া বা সংকেতের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। মূত্রথলির যত্ন নিতে হবে ও প্রয়োজনে ক্যাথেটার ব্যবহার করতে হবে। স্ট্রোকের রোগীর দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ফিজিওথেরাপি অন্যতম সেরা সমাধান।

যথাযথ পর্যবেক্ষণ এবং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে, জটিলতার ঝুঁকি ছাড়াই স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। তবে কেউ যেন স্ট্রোক আক্রান্ত হয়ে জীবন ঝুঁকিতে না পড়ে সেই বিষয়েও বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। একদিকে যেমন যথা সম্ভব নিজেকে দুশ্চিন্তামুক্ত রাখা প্রয়োজন, অন্যদিকে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-আত্মীয়দের উচিৎ সর্বদা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ব্যক্তির পাশে থাকা। ভয় নয়, সচেতনতাই বাঁচাতে পারে জীবন।

 

ডা. মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন
কনসালটেন্ট, নিউরোলজি বিভাগ
এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম

 

কিডনি জটিলতা নিরাময়ে চাই সচেতনতা

কিডনি জটিলতা Kidney complications

কিডনি জটিলতা নিরাময়ে চাই সচেতনতা

বিশ্বের ৮৫০ মিলিয়ন মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত, যার মধ্যে প্রতিবছর ২.৪ মিলিয়ন মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। বিশ্বব্যাপি প্রতি ১০ জনে ১ জন এবং বাংলাদেশে প্রতি ৭ জনে ১ জন কিডনি রোগে আক্রান্ত। দিন দিন বিভিন্ন কারণে কিডনি রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ একটু সচেতন হলেই আমরা কিডনি সুস্থ রাখতে পারি

কিডনির মানবশরীরে রক্ত প্রবাহ পরিচালনা করে। কিডনিতে প্রায় ১০ লক্ষ নেফ্রন নামক উপাদান থাকে, যা রক্তে জমে থাকা দূষিত ও ক্ষতিকারক পদার্থ আলাদা করে প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেয়। এর পাশাপাশি শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা, বিভিন্ন হরমোন তৈরি বা তৈরিতে সাহায্য করা, রক্তকনা তৈরিতে সাহায্য করা, শরীরের হাড় সুস্থ রাখা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কাজও কিডনি দ্বারা হয়। তাই কিডনি যদি সুস্থ না থাকে তাহলে এসব কাজে বিঘ্ন সৃষ্ট হয় এবং শারীরিক বিপর্যয় দেখা দেয়।

কিডনি রোগীদের অধিকাংশই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। অনিয়ন্ত্রিত ও দীর্ঘকালীন ডায়াবেটিস কিডনি বিকলের অন্যতম কারণ। উচ্চ-রক্তচাপ আরেকটি কারণ। এটিও ডায়াবেটিসের মতোই নীরব ঘাতক। গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস, পলিসিস্টিক-এর মতো কিডনি জটিলতার কারণে উচ্চ-রক্তচাপ হতে পারে। ফলে উচ্চ-রক্তচাপের কারণ খুঁজতে গিয়ে কিডনির অন্তর্নিহিত আরেকটি রোগও ধরা পড়তে পারে। অন্যদিকে, শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে কিডনি বিকল হয়ে পড়তে পারে। পানিশূন্যতার অন্যতম কারণ হলো ডায়ারিয়া, বমি ইত্যাদি।

তবে অতিরিক্ত গরম, শরীর পুড়ে যাওয়া, অতিরিক্ত রক্তপাত ইত্যাদি কারণে শরীর থেকে অনেক লবণ পানি বেরিয়ে যায়। ফলে পানিশূন্যতা দেখা দেয় এবং কিডনি বিকলতার ঝুঁকি থাকে। পরিবারে কিডনি রোগের ইতিহাস থাকলেও কিডনি রোগ দেখা দিতে পারে। এছাড়া প্রস্রাবের চাপ আটকে রাখা, অপুষ্টি, ধূমপান, অতিরিক্ত বা ভুল ঔষধ খাওয়া ইত্যাদি কারণেও কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সাধারণত ৭০-৮০ ভাগ কিডনির কর্মক্ষমতা নষ্ট বা বিকল হওয়ার আগে রোগের উপসর্গ বোঝা যায় না।

তবে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, ঘন ঘন প্রস্রাব, প্রস্রাব লাল হওয়া, প্রস্রাবে দুর্গন্ধ, কোমরের দুই পাশে ও তলপেটে ব্যথা, শরীর-মুখ ফোলা ইত্যাদি কিডনি রোগেরই সংকেত দেয়। এসব সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। চিকিৎসার তিন মাসের মধ্যে রোগ না সারলে এটিকে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ হিসেবে ধরা হয়। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও নেফ্রাইটিসের (কিডনির বিভিন্ন সমস্যা) কারণে শতকরা ৮০ ভাগ রোগীর কিডনি বিকল হয় বা ঝুঁকি থাকে।

আমাদের দেশেই এখন কিডনি রোগের আধুনিক পদ্ধতিতে রোগ নির্ণয়, পরামর্শ এবং বিশ্বমানের চিকিৎসা সম্পন্ন হচ্ছে। সিটি স্ক্যান, এমআরআই এবং কিডনি বায়োপসি ছাড়াও আধুনিক পদ্ধতি যেমন; ইউআরই (প্রস্রাবের রুটিন পরীক্ষা); ইউরিন অ্যালবুমিন; ক্রিয়েটিনাইন রেশিও (এসিআর); ইজিএফআর; কেইউবি এরিয়ার আল্ট্রাসাউন্ড ইত্যাদি পরীক্ষার মাধ্যমে কিডনি রোগ নির্ণয় করা হয়।

কিডনি রোগের চিকিৎসা কিছুটা ব্যয়বহুল বটে, তবে একটু সচেতন হলে ৫০-৬০ ভাগ ক্ষেত্রে সেই ঝুঁকি প্রতিরোধ করা সম্ভব। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান, বছরে একবার কিডনি পরীক্ষা, ডায়াবেটিস ও উচ্চ-রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ না খাওয়া; অপুষ্টিকর ও ভেজাল খাবার পরিহার করা; নিয়মিত হাঁটাসহ শারীরিক পরিশ্রম করা কিডনিকে সুস্থ রাখতে ও রোগের ঝুঁকি প্রতিরোধে সাহায্য ব্যাপক করে।

কিডনির একটি জটিল রোগ হলো সিকেডি, যা অন্যান্য অবস্থার তুলনায় কিছুটা গুরুতর। তবে এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম করণীয় হল অস্বাভাবিক জীবনযাপন ত্যাগ করা, যতটা সম্ভব সতর্ক থাকা, সময়মতো ঔষধ খাওয়া, শারীরিক-মানসিকভাবে সুস্থ থাকার চেষ্টা করা। এছাড়া, উচ্চ-রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, উচ্চ-কোলেস্টেরল ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে রাখা। সিকেডি’র অবস্থা গুরুত্বর (স্টেজ ৫) হলে ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি প্রতিস্থাপনেরও প্রয়োজন হতে পারে। তাই এসময় রোগীর বাড়তি যত্ন নিশ্চিত ও সচেতন থাকা খুব জরুরি।

 

স্ট্রোক পরবর্তী সার্জারির প্রয়োজনীয়তা

স্ট্রোক পরবর্তী সার্জারি | Surgery after Stroke

স্ট্রোক পরবর্তী সার্জারির প্রয়োজনীয়তা

আমরা মূলত দুই ধরণের স্ট্রোকের সাথে পরিচিত; ‘হেমোরেজিক’ ও ‘ইস্কিমিক’। হেমোরেজিক স্ট্রোক ব্রেন হ্যামারেজ নামেও পরিচিত। এর ফলে সাধারণত মস্তিষ্কের রক্ত চলাচলের নালী ছিঁড়ে যায়, যার ফলে অবস্থা মুহূর্তের মধ্যেই জটিল হতে পারে। অপরদিকে, ইস্কিমিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হয়, এমনকি বন্ধও হয়ে যায়।

সহজভাবে বললে, যখন মস্তিষ্কের কোন অংশে রক্ত সরবরাহ ব‌ন্ধ হয়ে গিয়ে মস্তিষ্কের কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়, তখন তাকে ইস্কেমিক স্ট্রোক বলে। স্ট্রোকের চিকিৎসা কখনো কখনো যেমন সহজ, কখনো আবার কিছুটা জটিল। তবে সেটি নির্ভর করে রোগীর অবস্থা এবং তাৎক্ষনিক পদক্ষেপের উপর। স্ট্রোকের পর রোগী অজ্ঞান হয়ে গেলে ভয় না পেয়ে তাৎক্ষণিক চিকিৎসকের পরামর্শ অথবা নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিৎ।

প্রাথমিক ভাবে কিছু পদক্ষেপ:

প্রাথমিক ভাবেও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শ্বাসনালী, শ্বাস-প্রশ্বাস ও রক্ত সঞ্চালন সচল রাখা। এছাড়া রোগীকে একদিকে কাত করে, বালিশ ছাড়া মাথা নিচু করে শোয়ানো, চোখের প্রতি লক্ষ্য রাখা, মূত্রথলির যত্ন নেওয়া, প্রয়োজনে ক্যাথেটার ব্যবহার করা ইত্যাদি বিষয়গুলো নিশ্চিত করা প্রয়োজন। প্রাথমিকভাবে উল্লেখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণের মাধ্যমে রোগীকে যেকোন বড় জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।

তবে রোগীর অবস্থাভেদে যদি সার্জারির প্রয়োজন হয় তবে তা অবহেলা করা উচিৎ নয়। মধ্যবয়স্ক রোগী বা যাদের বয়স ৪০ এর কম, তাদের ক্ষেত্রে মূলত সার্জারি প্রয়োজন হয়। রক্ত জমাট বাঁধলে তা যত দ্রুত সম্ভব ক্রেনিয়েক্টমি (মাথার খুলি কেটে) করে সাবধানতার সাথে সার্জারি করতে হয়, নাহলে ঝুঁকি বেড়ে যায়। অনেক রোগীই প্রাথমিক পর্যায়ে গাইডলাইন ফলো করে না, ফলে তারা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ভোগেন। সুতরাং, এই বিষয়গুলো অবহেলা করা যাবে না।

স্ট্রোকের ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপি অন্যতম একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। অনেক সময় দেখা যায়, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চল বা প্রান্তিক অঞ্চলগুলোয় ফিজিওথেরাপি নিয়ে জনমনে সচেতনতা খুবই কম। অনেক রোগীরই স্ট্রোকের পর হাত-পা বেঁকে যায় এবং বাকি জীবন এভাবেই থেকে যায়। সেসব রোগীদের জন্য ফিজিওথেরাপী ভীষণ উপকারী। অনেকে ভাবেন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা কোন কাজে আসে না। তবে ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। তবে সঠিক স্থানে ও সঠিকভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

 

ডা. মো: আনিসুল ইসলাম খান
সিনিয়র কনসালটেন্ট ও কো-অর্ডিনেটর, নিউরোসার্জারি বিভাগ
এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম

হৃদরোগের কারণ ও চিকিৎসা

Heart disease হৃদরোগের কারণ ও চিকিৎসা

হৃদরোগের কারণ ও চিকিৎসা

হৃদযন্ত্রের নিজস্ব রক্তনালীতে চর্বি জমে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হলে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে পারে, যা হৃদরোগ হিসেবে পরিচিত। যেকেউই হৃদরোগের শিকার হতে পারেন। কিশোর বয়স থেকে সূত্রপাত হলেও সাধারণত মধ্যবয়স থেকে রোগ প্রকাশ পেয়ে থাকে। পুরুষদের হৃদরোগের প্রবণতা তুলনামূলক বেশি, তবে নারীরাও বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাকের বাড়তি ঝুঁকিতে থাকেন।

যারা ধূমপান করেন এবং ডায়াবেটিস, উচ্চ-রক্তচাপ, রক্তে উচ্চ-মাত্রায় কোলেস্টেরল জনিত সমস্যায় ভুগছেন তাদের হৃদরোগে আক্রান্তের ঝুঁকি বেশি। পরিবারে পূর্বে হৃৎপিণ্ডের রক্তনালীর সমস্যা বা ইসকেমিক ডিজিজ থাকলে পরিবারের অন্যান্যদের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

হৃদরোগের শুরুতে শুয়ে-বসে থাকলে কোন উপসর্গ দেখা না দিলেও শারীরিক পরিশ্রমের সাথে সাথে বুকের মাঝখানে ব্যাথা বা অসস্তি অনুভূত হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে বুক ভারী, বুকে চাপ, বাম হাত-ঘাড় বা চোয়ালে, বুকের পেছনে ইত্যাদি জায়গায় ব্যথা অনুভূত হতে পারে। পেটের উপরিভাগে ব্যথাও অনেক ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ হতে পারে।

হৃদরোগের চূড়ান্ত পর্যায়ে অতিরিক্ত ঘাম, শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া, মাথা ঝিমঝিম করা, জ্ঞান হারানো ইত্যাদি সমস্যাও দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে, বুকে ব্যথা অনুভূত হলে রোগীকে দ্রুতই নিকটস্থ হাসপাতালে নিতে হবে এবং দ্রুত ই.সি.জি ও রক্ত পরীক্ষা করে হার্ট অ্যাটাকের বিষয়টি নিশ্চিত হতে হবে।

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি

হৃদরোগে আক্রান্তরা যেকোনো মূহুর্তেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে থাকেন। হৃৎপিণ্ডের রক্তনালীতে রক্ত চলাচল পুনঃপ্রতিষ্ঠা করাই হলো এর প্রধান চিকিৎসা। যত দ্রুত চিকিৎসা প্রদান করা যায়, রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা তত বেশি। এনজিওগ্রাম-এর মাধ্যমে হার্টের ব্লক সনাক্ত করে দ্রুত তা অপসারণ করে রক্ত চলাচল পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হলো হার্ট অ্যাটাকের সর্বাধুনিক চিকিৎসা। তবে এজন্য প্রয়োজন আধুনিক সরঞ্জামসমৃদ্ধ ক্যাথল্যাব ও সার্বক্ষণিক দক্ষ জনশক্তি।

আবার বিকল্প হিসেবে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে রক্ত জমাট ভেঙ্গে দিয়ে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করা যেতে পারে। উভয় পদ্ধতিই হার্ট অ্যাটাকের স্বীকৃত চিকিৎসা। কোন পদ্ধতি কোন রোগীর ক্ষেত্রে অধিক কার্যকরী তা নির্ভর করে রোগীর অবস্থা ও চিকিৎসকের পরামর্শের উপর।

স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করলে হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব। ধূমপান ত্যাগ করা, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, চর্বিজাতীয় খাবার পরিহার করা, নিয়মিত শরীরচর্চা করা, ফাস্টফুড ও জাঙ্কফুড পরিহার করা, যথাসম্ভব দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপমুক্ত থাকা ইত্যাদি অভ্যাসের মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। আর ইতোমধ্যেই হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত ব্যক্তিরা যদি নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ ও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলেন, তাহলে হৃদরোগ নিয়েও দীর্ঘসময় স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব।

 

ডা: মো: তারিক বিন আব্দুর রশিদ
সিনিয়র কনসালটেন্ট, ক্লিনিক্যাল ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজি
এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম।

গর্ভবতী মায়ের যত্ন ও নিরাপদ মাতৃত্ব

গর্ভবতী মায়ের যত্ন ও নিরাপদ প্রসব pregnant mother

গর্ভবতী মায়ের যত্ন ও নিরাপদ মাতৃত্ব

মা শুধু পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম ডাক বা অনুভূতিই নয়, মাতৃত্ব একজন নারীর সবচেয়ে বড় সার্থকতা। কিন্তু একজন নারী যখন প্রথমবার গর্ভধারণ করেন তখন অনেক কিছুই তার অজানা থাকে। তাই সন্তান ধারণ থেকে শুরু করে শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত একজন মা’কে অনেক বিষয়ে সতর্কতা ও সচেতনতা অবলম্বন করতে হয়। চলুন গর্ভবতী মায়ের যত্ন ও নিরাপদ মাতৃত্ব সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

একজন গর্ভবতী মায়ের যথাযথ যত্ন নিশ্চিতে পরিবারের সদস্য ও কাছের মানুষরাই প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু নিজেরও অসতর্ক হলে চলবে না। কারণ মায়ের সুস্থতার উপরে আগত সন্তানের সুস্থতা নির্ভরশীল।

গর্ভবতী মায়ের খাওয়া দাওয়া এবং মানসিক ও শারীরিক যত্নঃ

শিশু গর্ভে থাকাকালীন তার শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গঠিত হয়। তাই এসময় মায়ের খাদ্যের উপর বিশেষ যত্ন নিতে হবে। মায়ের খাওয়া খাদ্য প্লাসেন্টা’র মাধ্যমে শিশুর শরীরে প্রবেশ করে।

তাই মা যা খাচ্ছে সেটি মা-শিশু উভয়ের জন্যই পর্যাপ্ত পুষ্টির জোগান দিচ্ছে কিনা, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অন্যদিকে মা যদি অসুস্থ হয় বা যদি কোনো বিষয়ে মানসিকভাবে উদ্বিগ্ন থাকে, সেটিও উভয়ের জন্য সমান ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই গর্ভকালীন একজন মায়ের সমানভাবে শারীরিক ও মানসিক যত্ন নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। মানসিক চাপমুক্ত থাকা, ভারী কোন ওজন না নেওয়া, উঁচুনিচু স্থান এড়িয়ে চলা, ইত্যাদি বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।

পরিকল্পিত গর্ভধারণ মা ও শিশু উভয়ের জন্যই অত্যন্ত নিরাপদ। সন্তান ধারণের আগে মায়ের ডায়াবেটিস, থাইরয়েড, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি শারীরিক পরীক্ষা করে নেওয়া প্রয়োজন। সেইসাথে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সন্তান ধারণের তিনমাস আগ থেকে নিয়মিত ফলিক অ্যাসিডসহ অন্যান্য ওষুধ সেবনের প্রয়োজনও হতে পারে। গর্ভবতী মায়েদের পোশাক নিয়েও সচেতন থাকা উচিৎ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, আরামদায়ক, সহজে পরিধানযোগ্য ও ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান এবং সঠিক মাপের নরম জুতা পরা এবং উঁচু বা হিল জুতা পরিহার করাই শ্রেয়।

একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীর প্রায় প্রতি মাসেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিৎ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি তথ্য অনুযায়ী, একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীকে অবশ্যই কমপক্ষে চারবার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিৎ। এই চারবার হচ্ছে যথাক্রমে ১৬, ২৮, ৩২ ও ৩৬তম সপ্তাহে। এছাড়া কারও শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

একজন প্রসুতি মায়ের জন্য গর্ভধারণকালীন প্রথম এবং শেষ তিনমাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশু গর্ভে থাকার প্রথম তিন মাসেই তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো পূর্ণ রূপ ধারণ করে। গর্ভাবস্থায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মায়েদের হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি পড়ে যায়। কারণ এ সময় গর্ভস্থ শিশুর শরীরে লৌহের চাহিদা মেটানোর পর মায়েদের রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। এজন্য গর্ভবতী মাকে এসময় প্রয়োজনীয় ওষুধের পাশাপাশি সবুজ শাকসবজি, ফলমূল ও অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে।

গর্ভে থাকাকালীন শেষ তিন মাস শিশু খুব দ্রুত বেড়ে ওঠে। যে কারণে প্রসূতি মায়ের পায়ে পানি আসতে পারে। এছাড়া শেষ তিন মাসে পেট বড় হয়ে যাওয়ার কারণে গর্ভবতী মায়ের অনেক কষ্ট হয়। এই সময়ে কিছু জটিলতাও দেখা দিতে পারে, যেমন অস্বাভাবিক পেট বড় বা ছোট হওয়া, হঠাৎ রক্ত ভাঙা, খুব বেশি জ্বর আসা, রক্তচাপ অতিরিক্ত বেশি হওয়া। এমন পরিস্থিতিতে অনতিবিলম্বে চিকিৎসককে দেখাতে হবে।

বিশ্বমানের সুবিধাসম্পন্ন এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এ মা ও শিশুর জন্য রয়েছে মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার সেন্টার। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও সর্বাধুনিক সুবিধায় সুসজ্জিত এই হসপিটাল মা ও শিশুর সুসাস্থ্য নিশ্চিতে একটি আস্থাময় স্থান। তাই গর্ভবতী মায়ের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্ত পানি ভাঙলে, ব্যথা উঠলে, বাচ্চার নড়াচড়া কমে গেলে নির্দ্বিধায় যোগাযোগ করুন এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এর মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার সেন্টার-এ।

 

ডা: ফারজানা হাসীন (মুক্তি)
এমবিবিএস, ডিজিও, এফসিপিএস (গাইনি অ্যান্ড অবস্)
এমসিপিএস (গাইনি অ্যান্ড অবস্)
সিনিয়র কনসালটেন্ট- অবস্ অ্যান্ড গাইনি
এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম

ERCP: An Effective Procedure for Common Bile Duct Stones, Stenting in Cancer Patients, and Emergency Relief

ERCP

How ERCP can help you with your bile duct problems

Endoscopic Retrograde Cholangiopancreatography (ERCP) is a minimally invasive procedure that combines endoscopy and fluoroscopy to diagnose and treat disorders of the bile ducts, pancreatic ducts, and gallbladder. ERCP is a safe and effective procedure that can help diagnose and treat a variety of conditions related to the biliary and pancreatic systems.

One of the most common applications of ERCP is the removal of common bile duct stones. These stones are formed from bile components and can cause jaundice, pain, and inflammation of the pancreas. ERCP is used to remove these stones and can be performed as an outpatient procedure.

ERCP Procedure: How It Works

During the procedure, an endoscope is inserted through the mouth and into the duodenum, where it can access the opening of the bile duct. A catheter is then inserted into the duct and contrast dye is injected to visualize any stones or blockages. If stones are detected, a small basket or balloon is used to remove them.

ERCP can also be used to place plastic or metallic stents in patients with cancer of the gallbladder or pancreas. These stents can help relieve blockages caused by the tumor and can improve the patient’s quality of life. The stent can be inserted through the bile duct during the ERCP procedure, and can remain in place for several months.

In emergency situations, ERCP can also be used to place stents for relief of pain, fever, and jaundice caused by cholangitis. Cholangitis is a serious condition that occurs when the bile ducts become infected and inflamed. The placement of a stent can help relieve the pressure and improve the patient’s symptoms.

In conclusion, ERCP is a safe and effective procedure that can help diagnose and treat a variety of conditions related to the biliary and pancreatic systems. From the removal of common bile duct stones to the placement of stents for cancer patients and emergency situations, ERCP is a versatile procedure that can significantly improve patient outcomes.

 

Dr. Sandeep Dhavan 
MBBS,MD (Medicine), DM (Gastroenterology) (PGIMER-Chandigarh, India)
Senior Consultant at Evercare Hospital Chattogram
Gastroenterology & Hepatology

Colonoscopy: A Valuable Diagnostic and Therapeutic Procedure

Endoscopy - A Diagnostic & Therapeutic Tool | Evercare Hospital Chattogram

Colonoscopy is a medical procedure used to diagnose and treat conditions of the large intestine. A long, flexible tube with a camera and light, called a colonoscope, is inserted into the rectum and through the colon to examine the lining of the intestine. It is a valuable tool used by gastroenterologists to diagnose and treat a range of conditions.

Diagnostic Colonoscopy:

Colonoscopy is primarily used as a diagnostic tool to investigate symptoms related to the large intestine. These symptoms include abdominal pain, chronic blood loss, chronic diarrhea, and per rectal bleeding. It is also used for surveillance colonoscopy in patients with a history of polyps, inflammatory bowel disease, or cancer. During the procedure, the doctor can take tissue samples for biopsy, remove polyps, and look for any abnormalities that may be present.

Therapeutic Colonoscopy:

In addition to diagnostic use, colonoscopy is also used therapeutically to treat various conditions of the large intestine. Some of the procedures performed using colonoscopy include:

Polypectomy:

Polyps are small growths on the inner lining of the intestine that can become cancerous over time. Colonoscopy can be used to remove these polyps to reduce the risk of cancer.

Colonic dilatation:

Colonic dilatation is used to treat strictures, or narrowings, in the colon that can cause obstruction. The doctor can use a balloon to gently stretch the narrowed area and restore normal function.

Hemostasis of ulcer bleed:

Ulcers can cause bleeding in the colon, and colonoscopy can be used to stop the bleeding by applying various techniques like injection, clips or thermal treatment.

In conclusion, colonoscopy is a valuable diagnostic and therapeutic procedure used to examine and treat conditions of the large intestine. It is a safe and effective way to diagnose and treat a range of conditions, including polyps, strictures, and ulcer bleeding. If you are experiencing any symptoms related to the large intestine, speak to your doctor to see if colonoscopy may be the right choice for you. It is important to follow up with your gastroenterologist regularly to ensure optimal care and management of your intestinal health.

 

Dr. Sandeep Dhavan
MBBS,MD (Medicine), DM (Gastroenterology) (PGIMER-Chandigarh, India)
Senior Consultant at Evercare Hospital Chattogram
Gastroenterology & Hepatology